Tips

তুলসী পাতার গুণাগুণ ও ব্যবহার

◊◊ তুলসী একটি ঔষধি গাছ। তুলসী অর্থ যার তুলনা নেই। সুগন্ধিযুক্ত, কটু তিক্তরস, রুচিকর। এটি সর্দি, কাশি, কৃমি ও বায়ুনাশক এবং হজমকারক ও এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই এর বিশেষ গুনাগুন নিয়ে আমরা আজ এই পোস্ট টি সাজিয়েছি আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে ।

তবে বিশেষ করে কফের প্রাধান্য যেসব রোগ সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে তুলসী ফল দায়ক। তো চলুন দেখে নেয়া যাক তুলসী পাতার গুণাগুণ ।

নিরাময় ক্ষমতা

তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন আছে। তুলসী পাতা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি কারি। এটা শ্বাসনালী থেকে সর্দি কাশি দূর করে। তুলসীর ক্ষত সারানোর ক্ষমতা আছে।কোন কারনে রক্ত দূষিত হলে তুলসী পাতার রস কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়।

তুলসী পাকস্থলীর শক্তি বৃদ্ধি করে ও অনেক বেশি ঘাম বের হতে সাহায্য করে ।এটি মাথা ব্যাথা ভালো করতে পারে এর জন্য চন্দনের পেস্ট এর সাথে তুলসী পাতা হালকা করে বেটে মিশিয়ে কপালে লাগালে মাথা ব্যথা ভালো হয়ে যায় ।

জ্বর সারাতে

তুলসীর জীবাণুনাশক ছত্রাকনাশক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক ক্ষমতা আছে। তাই এটা জ্বর ভালো করতে পারে। সাধারণ জ্বর থেকে ম্যালেরিয়ার পর্যন্ত ভাল করতে পারে তুলসী পাতা ।

তুলসী পাতার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে ফুসফুসের সমস্যা, কাশি এবং ঠাণ্ডাজনিত রোগে তুলসী পাতার রস মধু ও আদা মিশিয়ে পান করলে উপশম পাওয়া যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে তুলসী পাতার রস, লবণ ও লবঙ্গ মিশিয়ে পান করলে ভালো ফল পাওয়া যায় ।

ডায়াবেটিস রোগে

তুলসী পাতায় প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল আছে যা ইউজেনল, মিথাইল ইউজেনল উৎপন্ন করে । এই উপাদানগুলো অগ্ন্যাশয় এর বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে যার ফলে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায় ।

এতে ব্লাড সুগার কমে এবং ডায়াবেটিস ভালো হয় ।এছাড়াও সকাল বেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে রস পান করলে খাবারের রুচি বেড়ে যায় ।

কিডনি পাথর দূর করতে তুলসীর ব্যবহার

রক্তের ইউরিক এসিড-এর লেভেল কে কমাতে সাহায্য করে । কিডনি কে পরিষ্কার করে তুলসী পাতা । তুলসীর অ্যাসিটিক অ্যাসিড এবং এসেনশিয়াল অয়েল এর উপাদান গুলো কিডনির পাথর ভাঙতে সাহায্য করে ও ব্যথা কমায়। কিডনির পাথর দূর করতে প্রতিদিন তুলসী পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। এভাবে নিয়মিত 6 মাস খেলে কিডনির পাথর দূর হয়ে যাবে ।

ক্যান্সার নিরাময়ে তুলসী

তুলসীর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কারসিনোজেনিক উপাদান বেস্ট । ক্যান্সার ও উড়াল ক্যান্সারের বৃদ্ধিকে বন্ধ করতে পারে । কারণ এর উপাদান গুলো টিউমার এর মধ্যে রক্ত চলাচল বন্ধ করে দেয় । উপকার পেতে প্রতিদিন তুলসীর রস খাওয়া প্রয়োজন ।

তুলসী পাতার রস শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে শিশুদের ঠান্ডা লাগা জ্বর হওয়া এবং নানা ধরনের সমস্যা যেমন ডায়রিয়া ও বমির জন্য তুলসী পাতার রস ভালো কাজ করে।

তুলসী মানসিক চাপ কমাতে

মানসিক চাপে তুলসী পাতার উপকারিতা অনেক ।গবেষণায় দেখা গেছে মানসিক চাপে যারা রয়েছে তারা এ তুলসীপাতা রস করে গ্রহণ করলে অনেকটুকুই উপকার পায় ।কোন সুস্থ ব্যক্তি যদি প্রতিদিন অন্তত 12 টি তুলসীপাতা দিনে দুইবার নিয়মিত চিবাতে পারে তাহলে সেই ব্যক্তি কখনো মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হবে না বলে গবেষণা মতবাদ জানিয়েছেন ।

যদি কখনো বমি কিংবা মাথা ঘুরায় তাহলে তুলসী রসের মধ্যে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে মাথা ঘোরানো অনেক কমে যায় এবং মাথা ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে থাকে ।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে তুলসীর ব্যবহার

তুলসী পাতা মুখের আলসার ভালো করতে পারে । মুখের ঘা শুকাতে তুলসীপাতা ভালো কাজ করে । মুখে ইনফেকশন দূর করতে তুলসী পাতার গুরুত্ব অপরিসীম । প্রতিদিন কিছু পাতা দিনে দুইবার নিয়মিত চিবালে মুখের সংক্রমণ রোধ করা যায় ।

দাঁতের সুরক্ষায় তুলসী পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে দাঁত মাজলে দাঁত ভালো থাকে । এছাড়া সরিষার তেলের সাথে তুলসী পাতার গুড়া মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত শক্ত থাকে। মুখের দুর্গন্ধ রোধে তুলসী পাতার মাজন ভালো ফলন দিয়ে থাকে ।মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দিনে চার-পাঁচবার তুলসী পাতা চিবালে মুখ থেকে কোন গন্ধ বের হয় না । এবং ভালো ফল পাওয়া যায় ।

তুলসী পাতার ব্যবহার

>> রাতকানা রোগে নিয়মিত তুলসী পাতার রস ড্রপ হিসেবে ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায় ।

>> মুখে বসন্তের কালো দাগে তুলসীর রস মাখালে ওই দাগ মিশে যায়।

>> হামের পর যেসব শিশুর শরীরে কালো দাগ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে তুলসীপাতার রস মাখলে গায়ের রং ফিরে আসে ।

>> কয়েকটি তুলসী পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে ওই পানি দিয়ে সকালে চোখ ধুয়ে ফেললে চোখের সমস্যা দূর হয়ে যায় ।

>> তুলসী পাতা দূর্বাঘাস এর ডগার সঙ্গে বেটে মাখালে চর্ম রোগ ভালো হয়ে যায় ।

>> শরীরের কোন অংশ যদি কোন তাপীয় বস্তুর স্পর্শে পুড়ে যায় তাহলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগালে জ্বালাপোড়া কমে যাবে। পোড়া জায়গাটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে এবং পোড়া দাগটা ধীরে ধীরে উঠে যাবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *