Routine

ক্রিসমাস ডে। বড়দিন

খ্রিস্ট ধর্মাবলির কাছে সবচেয়ে বিশেষ দিনটি হলো 25 শে ডিসেম্বর। প্রায় গোটা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় এই ক্রিসমাস ডে বা বড়দিন। এই দিনটিকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। কেক কাটা থেকে শুরু করে গান গাওয়া উপহার আদান-প্রদানের মাধ্যমে উৎসব মেতে ওঠে আর চারদিক সেজে ওঠে ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজ ও রংবেরঙের আলো।

আমাদের আরও একটি পোস্টে আপনাদের স্বাগতম। আজকের এই পোস্টটিতে আপনারা ক্রিসমাস ডে বা বড়দিন নিয়ে অজানা সকল তথ্য জানতে চলেছেন। তাই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো। তো চলুন দেখে নেয়া যাক ক্রিসমাস ডে বা বড়দিন সম্পর্কে সকল তথ্য।

ক্রিসমাস শব্দের উৎপত্তি

“ক্রিসমাস” শব্দটি এসেছে প্রাচীনকালের ইংরেজি ক্রিস্টেস ম্যাসেস থেকে। এর অর্থ ” ক্রিসমাস ভর” । 25শে ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে পালন করা হয়। এই দিনটি যীশুর প্রকৃত জন্মদিন কিনা তা জানা যায়নি। প্রাচীনকালের খ্রিস্টান গবেষকদের বিশ্বাস অনুসারে, এই তারিখের ঠিক নয় মাস পূর্বে মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন যীশু। এই হিসেব অনুসারে 25 শে ডিসেম্বর তারিখটিকে যীশুর জন্ম তারিখ ধরা হয় আর এ কারণেই 25শে ডিসেম্বর কে ক্রিসমাস ডে বা বড়দিন হিসেবে পালন করা হয়।

কেন ক্রিসমাস ডে পালন করা হয়

বাইবেল অনুযায়ী যিশুখ্রিস্টের কোন জন্ম তারিখ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা নেই। তবে প্রাচীনকাল এর ইতিহাস অনুযায়ী 25 শে ডিসেম্বর বেথেলহেম কুমারী মা মেরির কোলে জন্মেছিলেন যীশু খ্রীষ্ট। বিজ্ঞানীরা ঠিক কখন যীশু খ্রীষ্টের জন্ম হয়েছিল তার সঠিক তথ্য দিতে পারে না।

ঐতিহাসিক মত অনুযায়ী যিশুখ্রিস্টের জন্ম হওয়ার আগে থেকেই 25 ডিসেম্বর বড় দিন হিসেবে পালন করা হয়। কেউবা মনে করে ডিসেম্বর মাসের ঠান্ডা বেশি থাকার কারণে বরফ জমে, জমে যাওয়া ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে রোমের মানুষজন এই দিনে সূর্যের কিরণ চেয়ে উপাসনা করতেন। এ সকল মানুষের খ্রিস্ট ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য এই দিনটিকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন বা ক্রিসমাস ডে হিসেবে পালন করা হয় ।

২৫ ডিসেম্বর বড়দিন কেন

অনেকেরই মনেই একটি প্রশ্ন জাগে 25 ডিসেম্বর বড়দিন পালন করা হয় কেন? এই কৌতুহল মানুষের মনে থেকেই যায় তো চলুন দেখে নেয়া যাক 25 ডিসেম্বর বড়দিন কেন পালন করা হয়।

25 শে ডিসেম্বর এই দিনটিকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটিতে প্রায় গোটা বিশ্বে পালিত হয় বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে। খ্রিস্টীয় ধর্মাবলির কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দিন।25 ডিসেম্বর বড়দিন, প্রথমদিকে এই দিনটি উৎসব আকারে পালন না হলেও তার মৃত্যুর কয়েকশো বছর পর 25 শে ডিসেম্বর তার জন্মদিন পালন করা হয়।

ইতিহাসবিদদের মত অনুযায়ী যিশুখ্রিস্টের জন্মের আগে থেকে রোমে প্রথম 25 ডিসেম্বর বড় দিন হিসেবে পালন করা হতো। পোপ জুলিয়াস পরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনটিকে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন। একারণেই 25 শে ডিসেম্বরকে বড়দিন হিসেবে পালন করা হয়।

বড়দিন কেন বলা হয়

ইতিহাসবিদ লুসিয়ান তার সমন্বয়ে ক্রিসমাস পালিত হতো বলে উল্লেখ করেছেন। 221 খ্রিস্টাব্দে মিশরের এটি দিনপঞ্জিতে লেখা হয়েছিল, মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন যীশু। এই হিসাব অনুসারে 25 ডিসেম্বর তারিখটিকে যীশুর জন্ম তারিখ ধরা হয় এ বিষয়ে রোমান ক্যালেন্ডার এ লেখা ছিল।এ হিসাবে গর্ভধারণের নয় মাস পর 25 শে ডিসেম্বর যীশু জন্মগ্রহণ করেন বলে খ্রিষ্টান ধর্ম গুরুরা জানায়।

ইতিহাসে 336 খ্রিস্টাব্দে রোমে বড় আকারে বড়দিন উদযাপন শুরু হয় “স্যাটার্নালিয়া” উৎসবকে কেন্দ্র করে। এরপর তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য দেশে। রোমান পঞ্জিকায় 354 খ্রিস্টাব্দে 25 শে ডিসেম্বর যীশুর জন্ম দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে 440 খ্রিস্টাব্দে পোপ কর্তিক স্বীকৃতি লাভ করেন এই দিনটি। তখনকার দেশে জানুয়ারি মাসে পালন করা হতো যিশুখ্রিস্টের জন্ম দিবস। তবে রোমান প্রভাবের কারণে 25 শে ডিসেম্বর বা বড়দিন ধীরে ধীরে দেশের সমস্ত দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে একারণেই বড়দিন বলা হয়।

কোন দেশ গ্রীষ্মকালে ক্রিসমাস উৎসব পালন করে

♦♦নিউজিল্যান্ড: ক্রিসমাস ডে নিউজিল্যান্ডে গ্রীস্মের মাঝামাঝি সময়ে পালিত হয়। এ সময় তারা ক্রিসমাস ডে সমুদ্রসৈকতে কাটাতে বেশি পছন্দ করে। ভিন্ন ভিন্ন শহরে শান্তা প্যারেডের আয়োজন করা হয়।

♦♦অস্ট্রেলিয়া: ক্রিসমাস ডে এই দিনটিতে অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত সমুদ্র সৌকত অনেক আনন্দে ভরপুর থাকে। এই দিনে তাদের খাবার প্রায় ঠান্ডা রাখে এবং তারা সামুদ্রিক খাবার রাখে।

♦♦দক্ষিণ আফ্রিকা: দক্ষিণ আফ্রিকাও দক্ষিণ গোলার্ধে রয়েছে, এ কারণে তাদেরও ক্রিসমাসের মৌসুম পরে। এ সময় অনেকে খেলাধুলায় লিপ্ত হতে বা সমুদ্রে সাঁতার কাটার জন্য গ্রাম অঞ্চলের ভ্রমণ করতেও দেখা যায়।

♦♦ আর্জেন্টিনা: আর্জেন্টিনায় ক্রিসমাস মানে সূর্য, কেননা আর্জেন্টিনায় এ সময় আবহাওয়া অনেক সুন্দর থাকে। এসময় লোকেরা যে কোন গাছকে ক্রিসমাসট্রি হিসেবে সাজায় আর তুষারপাতের চিত্র দেওয়ার জন্য এটিকে তুলোর বল দিয়ে সুন্দর করে সাজায়।

♦♦ ব্রাজিল: ক্রিসমাস ডে পালন করার জন্য ব্রাজিলএ বসবাস কৃত জনগণ তাদের সেরা গ্রীস্মের পোশাক পরে এবং সর্বত্র কৃত্তিম তুষার ছিটিয়ে দিন উপভোগ করতে থাকে। ব্রাজিলের বিখ্যাত গির্জাগুলোতে মধ্যরাতে গণসেবার ব্যবস্থা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *